জাবিতে হলের পাশে অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
প্রকাশিত : ১৯:৪১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) 'মেইন বার্ডস লেক' লেকের পাড়ে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করেছে জাবি চারুকলা বিভাগ। ভবন নির্মানের স্থানটি আবাসিক হল এলাকা হওয়ায় এতে প্রতিবাদ জানিয়েছে জাবি শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, লেক ও আবাসিক হল সংলগ্ন হওয়ায় পড়াশুনার পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র ধ্বংসের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া কাজ শুরুর পূর্বে পার্শ্ববর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের শিক্ষার্থীদের মতামত না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়ে উপাচার্য বরাবর শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন হলটির একদল শিক্ষার্থী। এসময় উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে একান্ত সচিব স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এছাড়া স্মারকলিপির দুটি অনুলিপি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবরও জমা দিয়েছেন তারা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কোনো মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া আবাসিক হলের পাশেই অ্যাকাডেমিক স্থাপনা করলে আবাসিক হল ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম উভয়ই ভবিষ্যতে বহুমুখী সমস্যায় পড়বে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক এলাকায় এই বহুতল ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হলেও বসবাসরত স্টেকহোল্ডারদের কোন ধরনের মতামত নেয়া হয়নি। এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও আবাসিক সুবিধাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। আবাসিক হলের নিকটবর্তী লেকে আসা অতিথি পাখি ও সবুজায়ন হারাবে তার চিরচেনা রূপ।
এতে আরও বলা হয়, পরিকল্পনাবিহীন আবাসিক এলাকায় একটি ছয়তলা বিশিষ্ট ভবন স্থাপিত হলে সম্পূর্ণভাবে শহীদ সালাম বরকত হল ও পাশে থাকা শিক্ষক কোয়ার্টার তার স্বাভাবিক পরিবেশ হারাবে। অন্যদিকে এই হলের সামনেই তৈরি হচ্ছে একটি খেলার মাঠ। এতো বড় জনসমাগম শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। হলের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনের লক্ষ্যে গড়ে উঠা খাবার ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দোকানগুলো ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। জন সমাগম বাড়লে এই সমস্যা আরো প্রকট হবে। এখানে গড়ে উঠবে দ্বিতীয় বটতলা এবং যা ভিতর ও বহিরাগত মানুষের জনসমাগমের কেন্দ্র হবে।
স্মারকলিপিতে হলটির শিক্ষার্থীরা দুটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- মাস্টারপ্লানবিহীন কোনোভাবেই একটি আবাসিক হল ও শিক্ষক কোয়ার্টারের সংলগ্ন আবাসিক এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে কোন ভবন নির্মাণ করা যাবে না এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্মারকলিপিটি উপাচার্য বরাবর পৌঁছে দিবেন বলে নিশ্চিত করেছেন একান্ত সচিব মঞ্জুরুল আলম।
নির্মাণকাজ শুরুর পূর্বে হলের শিক্ষার্থীদের মতামত না নেয়ার বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক ও বিভাগের (ডেজিগনেশন) সহযোগী অধ্যাপক এম. এম ময়েজউদ্দিন এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এসএস//
আরও পড়ুন